প্রবাসী জিবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা... পর্ব ২

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

২০১০ এর কোন এক দিন দুবাই থেকে বাই রোডে রওনা দেই ইউরোপের উদ্দেশ্যে।

দালালের সাথে কথা বলে দালালের সেইফ রোমে চলে গেলাম  ওখানে গিয়ে দেখি আরো চারজন তারা কেউই আমার পরিচিত না সবাই আমার মতো ইউরোপ যাবে দালাল আমাকে (আলআইন) শহর  থেকে একটা গারিতে তুলে দেয় প্রায় ২ ঘন্টা গাড়ি চলার পর একটা নির্জন জঙ্গলের পাশে আমাদের কে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি চলে যায় চারদিকে অনেক পাহাড় আর বন জঙ্গল কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ আমার ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে একটু পানি দিয়ে গলাটা ভিজিয়ে নিলাম,বেশী পানি নষ্ট করা যাবেনা কারণ আমার কাছে পানি খুবই সল্প ১লিটার পানি দিয়ে প্রায় দুই দিন চলতে হবে,

রাত ১২টার দিকে দালালের কথা মতো হাটতে  শুরু করি সাথে দুইজন পাকিস্তানি দালাল ওদের কাজ আমাদেরকে ভ্রিমি শহরে পুছে দেওয়া,প্রায় ১ঘন্ট সমতল জঙ্গলে হাটার পর আমরা এক বিশাল পাহাড়ের উপরের দিকে উটতে শুরু করি কখনো হেটে কখনো দৌড়ে  প্রায় চারঘন্টা শুধু পাহাড়ের উপরের দিকেই উঠে যাচ্ছি,দৌড়াতে দৌড়াতে  একসময় আমরা খুব ক্লান্ত হয়ে যাই একটু বসার চেষ্টা করি কিন্তু দালাল আমাদেরকে সেই সুযোগ টি দিল না বসতে গেলে ওরা আমাদের কে লাথি মারে,কি আর করার যত কষ্ট হৌক সামনের দিকে যেতেই হবে পিছনে যাওয়া যাবেনা পুলিশ ধরতে পারলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিবে,পাহাড়ের উপরে উঠে চারদিকে তাকিয়ে দেখি border gird police এর টহল, মনে আরো ভয় ডুকে গেল যদি আমাকে পুলিশ ধরে ফেলে তাহলে আমাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিবে।

আস্তে আস্তে পাহার থেকে নিচে নামতে শুরু করি পাহাড়ের মধ্যে অনেক বিষাক্ত কাটা গাছ একটু লাগলেই হাত পা কেটে যায় এবং প্রচুর ব্যাথা করে, এই ভাবে নামতে নামতে প্রায় ৩ ঘন্টা নামি সকাল হয়ে যায় পাহাড়ের চূড়ায় একটা জঙ্গলে বিশ্রাম নিতে লাগলাম,আবারো রাত হলে হাটা শুরু করতে হবে,দালালদের নিয়ম দিনের বেলা বিশ্রাম নেওয়া আর রাতের বেলায় পথচলা ধিরে ধিরে  রাত হয়ে আসে আমি দুটি বিস্কুট এবং একটু পানি খেয়ে পথ চলতে শুরু করি,এভাবে হাটতে হাটতে প্রায় পাচ ঘন্টা হাটার পর দালালরা আমাদেরকে একটা প্রাইভেট কারে তুলে দেয় গাড়িটি আমাদের কে

ভ্রিমি এক বাংলাদেশী দালালের সেইফ রোমে নিয়ে যায় ওখানে গিয়ে দেখি জেলখানার মতো প্রায় বিশ জন এক রোমে শুয়ে আছে বাহির হওয়ার সিস্টেম নাই এখানেই থাকতে হবে যতদিন দালালরা আমাদেরকে এখান থেকে না নিয়ে যায়,প্রথম দিন রাতে বাংলাদেশী দালাল জাহাংগীর এসে আমাদের কাছ থেকে মোবাইল সিম কার্ড টাকা পয়সা সব হাতিয়ে নেয় কিছু বলার সাহস পাইনি,এই ব্যাপারে কিছু বললেই মারধর করে, জাহাংগীর এইগুলা নিয়ে চলে যায় আর দেখা হয়নি৷
এক দিন দুই দিন এভাবে প্রায় পাচ দিন এই সেইফ রোম নামের জেলখানায় থাকতে হয়,পাচ দিন পর আমাদের কে ভ্রিমি থেকে ওমানের রাজধানী Muscat উদ্দেশ্যে একটি মাইক্রোবাসে তুলে দেয়।

লেখকঃসজিবুল হাসান সানি

ফেইসবুক লিংক     kazi.shajib.1000@Facebook.com

Comments

Popular posts from this blog

কুমিল্লার কিছু আঞ্চলিক ভাষা :

চান্দিনা উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ, চেয়ারম্যান সাহেব ও সচিবদের নাম এবং মোবাইল নাম্বার দেওয়া হইল।

অভিনেত্রী নিপুণ,কুমিল্লার মেয়ে।