নজরুলকে মনেপ্রাণে লালন করছে কুমিল্লা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের(মে ২৫,
১৮৯৯ – আগস্ট ২৯, ১৯৭৬) জীবন ও
সাহিত্যকর্মের এক তাৎপর্যপূর্ণ স্থান
দখল করে আছে কুমিল্লা। ১৯২১ সালের
এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের
জানুয়ারী পর্যন্ত কবির পাঁচবারের
আগমনে কুমিল্লায় সময় কেটেছে এগার
মাসেরও বেশি।
এসময়ে কুমিল্লার মুরাদনগর আর শহরের
বিভিন্ন স্থানে কবি তার জীবনের
গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো কাটিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর মসজিদের
পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত থাকলেও
কুমিল্লায় অসংখ্য স্মৃতিতে ভাস্বর
হয়ে আছেন জাতীয় কবি নজরুল।
ইতিমধ্যে কুমিল্লাবাসী তথা নজরুল
অনুরাগীদের জন্য নজরুল ইন্সটিটিউট,
কুমিল্লা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার
মধ্যদিয়ে জাতীয় পর্যায়ে নজরুল
গবেষণায় ব্যাপক ভূমিকা রাখার পথ
তৈরি হয়েছে। জাতীয় কবি নজরুল ও তার
স্মৃতি জাগরুক করে রাখার জন্য
কুমিল্লা এবং উপজেলা মুরাদনগরে কবির
নামে নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানের। এক কথায়
নজরুলকে মনেপ্রাণে লালন
করছে কুমিল্লা।
কবির প্রতি পরম শ্রদ্ধা আর
ভালোবাসায় এসব প্রতিষ্ঠান নজরুলের
চেতনাকে মনেপ্রাণে লালন
করে আলো ছড়াচ্ছে।
তারমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কবি কাজী নজরুল
ইসলাম হল।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের
ডিগ্রী শাখায় ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে কবি নজরুল ছাত্রাবাস।
কুমিল্লা শহরের নানুয়ার দীঘির দক্ষিণ
পাড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নজরুল
মেমোরিয়াল
একাডেমি নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কুমিল্লায় কবির অন্যতম সহচর নজরুল
গবেষক সুলতান মাহমুদ মজুমদারের
ভাতিজা অধ্যাপক হাসান ইমাম মজুমদার
ফটিক ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এ
প্রতিষ্ঠানটি।
কবির অন্যতম একটি কাব্য গ্রন্থের
নামে শহরের ঐতিহাসিক ধর্মসাগরের
উত্তর পাড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে গুল
বাগিচা প্রাথমিক বিদ্যালয়।
কুমিল্লা হাউজিং এস্টেটে গড়ে তোলা হয়েছে নজরুলের
নামে একটি সঙ্গীত বিদ্যালয়।
কুমিল্লার বিবির বাজারে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছে জাতীয় কবি নজরুল শিশু নিকেতন
নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কুমিল্লার মুরাদনগরের
দৌলতপুরে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নার্গিস-
নজরুল বিদ্যানিকতন নামের একটি নিম্ন
মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
এখানে সংগীত নৃত্য, নাটক প্রশিক্ষণ ও
পাঠাগারের জন্য
প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নজরুল নিকেতন
পাঠাগার। মুরাদনগরের
দৌলতপুরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার জন্য
স্থাপন করা হয়েছে নজরুল মঞ্চ।
দৌলতপুরের খাঁ বাড়িতে প্রবেশের
পথে স্থাপিত হয়েছে নজরুল তোরণ।
মুরাদনগর উপজেলা পরিষদ
মিলনায়তনের নামকরণ
করা হয়েছে কবি নজরুল মিলনায়তন।
১৯৬২ সালে কুমিল্লার তৎকালিন
জেলা প্রশাসক কবি আবু জাফর
ওবায়দুল্লাহ নজরুল স্মৃতিকে ধরে রাখার
জন্য শহরের ফরিদা বিদ্যায়তনের
সামনের সড়কটি নজরুল এভেনিউ নামকরণ
করেন। ১৯৭০ সালে কুমিল্লায় সাহিত্য
চর্চার মানসে গঠিত হয় নজরুল
ললিতকলা পরিষদ। যা পরবর্তীতে নজরুল
পরিষদ নামে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭২
সালে নজরুল স্মৃতি পরিষদ গঠিত হয়।
১৯৯২
সালে কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমীর
সামনে শিল্পী উত্তম গুহের
তৈরি চেতনায় নজরুল শীর্ষক
একটি স্মৃতি সৌধ নির্মিত হয়।
সবশেষে এবছরের ২০এপ্রিল কুমিল্লার
ঐতিহাসিক ধর্মসাগরের উত্তরপাড়ে আর
পার্কের দক্ষিণাংশে নজরুল
ইন্সটিটিউট, কুমিল্লা কেন্দ্রের
উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা। নজরুল ইন্সটিটিউট মানেই
নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র। ত্রিশাল ও
দরিরামপুরের পর কুমিল্লায় এটি তৃতীয়
নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র।

Comments

Popular posts from this blog

কুমিল্লার কিছু আঞ্চলিক ভাষা :

চান্দিনা উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ, চেয়ারম্যান সাহেব ও সচিবদের নাম এবং মোবাইল নাম্বার দেওয়া হইল।

অভিনেত্রী নিপুণ,কুমিল্লার মেয়ে।